Friday 11 October 2019

নবীজীর মাদানী জীন্দেগীর সংক্ষিপ্ত রূপরেখা।

 এবারে আলোচনা করব দ্বিতীয় বিষয়  তথা। 
মাদানি জিন্দেগীর সংক্ষিপ্ত রূপরেখা ঃ
এক নযরে মদিনার জিন্দেগীঃ
১ম প্রথম হিজরীতে মসজিদে নববী নির্মাণ করা হয়।এবং সহধর্মিণীদের জন্য মসজিদের পাশেই বাসভবন নির্মাণ, আযানের সূচনা, এবং ইয়াহুদীদের সঙ্গে শান্তিচুক্তি। 
প্রসঙ্গঃ
===========
নবীগণের জীবন কখনও কুসুমাস্তীর্ণ ছিল না। নবী করিম [ﷺ ]-এঁর ক্ষেত্রেও এর ব্যতিক্রম হয়নি। নবী করিম [ ﷺ ]-এঁর এরশাদ করেনঃ
“সবচেয়ে কঠিন পরীক্ষা হলো নবীগণের, তারপর অলি-আল্লাহগণের তারপর সাধারণ মো’মেনগণের।”(বেদায়া)
কয়েক মাস যেতে না যেতেই ইয়াহুদীরা মদিনা চুক্তি ভঙ্গ করে গোপনে মক্কার কোরাইশদের সাথে আঁতাত গড়ে তোলে। অপরদিকে মদিনার আদিবাসী আউছ ও খাজরাজ গোত্রের মধ্য হতে একদল মোনাফেকের সৃষ্টি হয়। এরা প্রকাশ্যে মুসলমান হলেও ভিতরে ভিতরে ইয়াহুদী ও কোরাইশদের সাথে যোগ দেয়। এদের সর্দার ছিল আবদুল্লাহ ইবনে ওবাই। সে নবী করিম [ ﷺ ]-এঁর পিছনে দাঁড়িয়ে নামায পড়তো। কিন্তু মসজিদের বাইরে গেলেই তার মোনাফেকী শুরু হতো। সে মদিনার সম্ভাব্য নেতা হতে যাচ্ছিল। নবী করিম [ﷺ ]-এঁর আগমনের ফলে তার সে আশা চূর্ণ হয়ে গিয়েছিলো। এই মোনাফেকরাই ইসলামের ক্ষতি করেছে বেশী। এদের আহবানেই মক্কার কোরাইশরা বার বার মদিনা আক্রমণ করতে সাহস পেয়েছিল। হিজরতের দ্বিতীয় বর্ষে বদেরর যুদ্ধ, তৃতীয় হিজরীতে ওহুদের যুদ্ধ এবং পঞ্চম হিজরীতে খন্দকের যুদ্ধে মুনাফিকদের যোগসাজশেই মক্কার কোরাইশরা আক্রমণাত্মক ভূমিকা পালন করে। তারপর থেকেই কোরাইশদের দর্প চূর্ণ হয়ে যায়।
৫ম হিজরী পর্যন্ত নবী করিম [ﷺ ] আত্মরক্ষামূলক জিহাদ পরিচালনা করতেন। ৬ষ্ঠ হিজরী সন থেকে ইতিহাসের গতি ফিরে যায়। নবী করিম [ ﷺ ] খন্দকের যুদ্ধের পর থেকেই আক্রমণাত্মক যুদ্ধ পরিচালনা করতে সক্ষম হন। খায়বার, মুতা, মক্কা বিজয়, হুনাইন, তায়েফ ও তাবুক প্রভৃতি যুদ্ধে নবী করিম [ ﷺ ] মদিনার বাইরে গিয়ে যুদ্ধ পরিচালনা করেন। এসব যুদ্ধে কাফেরগণ পর্যূদস্ত হয়ে যায়। গোটা আরব উপদ্বীপে (জাযিরাতুল আরব) ইসলামের বিজয় নিশান উড্ডীন হয়। নবী করিম [ﷺ ] ইসলামকে বিজয়ী শক্তি হিসাবে প্রতিষ্ঠিত করেন। আল্লাহর প্রতিশ্রুতি অক্ষরে অক্ষরে বাস্তবে পরিণত হয়। মক্কী জিন্দেগীতে ইসলামের বিধি-বিধান পূর্ণ বাস্তবায়িত করা সম্ভব ছিল না। কেননা, সেখানে মুশরিক শাসন ও প্রতিকূল পরিবেশ বিরাজমান ছিল।
ইসলামের মূল পাঁচটি ভিত্তির মধ্যে ১টি বুনিয়াদ অর্থ্যাৎ কলেমা “ ﻟَﺎ ﺍِﻟِﻪَ ﺍِﻟَّﺎ ﺍﻟﻠﻪُ ﻣُﺤَﻤَّﺪُ ﺭَّﺳُﻮْﻝَ ﺍﻟﻠﻪَ ﷺ ” মক্কাতে জারি করতে পেরেছিলেন। বাকী ৪টি রোকন - নামায, রোযা, হজ্ব, যাকাত মদিনাতে এসে বাস্তবায়িত করেন। ইসলামের অন্যান্য হুকুম আহকাম এবং বিধি বিধান মদিনাতেই নাযিল হয়। সুতরাং মদিনার জীবন কন্টকাকীর্ণ হলেও ইসলামের পূর্ণাঙ্গ জীবন বিধান প্রতিষ্ঠিত করার সুযোগ এ সময়েই হয়েছিল। সাফল্যের আনন্দ ও ইসলামের আনন্দ ও ইসলামের পূর্ণ বিধান প্রতিষ্ঠিত করার সুযোগ মদিনাতেই হয়েছিল। এদিক দিয়ে বিবেচনা করলে নবী করিম [ ﷺ ]-এঁর হিযরতের সুদূর প্রসারী সাফল্য লক্ষ্য করা যায়। পূর্বেই উল্লেখ করা হয়েছে - হিজরত প্রকাশ্যভাবে দেশ ত্যাগ হলেও প্রকৃতপক্ষে ছিল বিশ্ববিজয়ের সোপান এবং সাফল্যের ধার উৎঘাটন। এবার ক্রমান্বয়ে ঘটনাবলী বর্ণনা করার চেষ্টা করবো।
          আল্লহতে যার পুর্ন ইমান
৷ ৷    কোথা সে মুসলমান, 
৷ ৷ ৷ কোথা সে শিক্ষা আল্লাহ ছাড়া
৷ ৷   ত্রিভুবনে ভয় করিত না যারা, 
. আযাদ করিতে এসেছিল যারা 
সাথে লয়ে পাক কুরআন

No comments:

Post a Comment